প্রকৃতিই মানুষের প্রকৃত বন্ধু

প্রকৃতিই মানুষের প্রকৃত বন্ধু


 এক দেশে ছিল এক বৃদ্ধ বুদ্ধিমান গাছ। গাছটি অনেক দিন ধরে সবার কথা শুনে আসছে, শিখছে এবং পরিবেশকে দেখে তার নিজের মতো করে কিছু জ্ঞান জমিয়েছে। একদিন, এক বাচ্চা পাখি গাছের ডালে এসে বসল। পাখিটি কৌতূহলী হয়ে বলল, "গাছ দাদু, তুমি কি জানো, পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণী কে?"



গাছটা মুচকি হেসে বলল, "হ্যাঁ, জানি।" বাচ্চা পাখিটি কৌতূহল নিয়ে বলল, "তাহলে বলো না, গাছ দাদু!"


গাছটি একটু গভীর স্বরে বলল, "এই পৃথিবীতে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণী হল মানুষ।" পাখিটি অবাক হয়ে বলল, "কেনো? মানুষ তো অনেক বুদ্ধিমান, অনেক শক্তিশালী! তারা তো প্রকৃতিকে রক্ষা করে, সুন্দর বাড়ি তৈরি করে, গান গায়, কবিতা লিখে।"


গাছ দাদু একটু গম্ভীর স্বরে বলল, "মানুষের মধ্যে ভালো কিছু আছে, সেটা ঠিক। কিন্তু তাদের মধ্যে যে আত্মকেন্দ্রিকতা, যে লোভ, সেটাই তাদের ভয়ঙ্কর করে তোলে। যখন তাদের লোভ জাগে, তখন তারা বন্যপ্রাণী শিকার করে, বনজঙ্গল কেটে ফেলে, নদী দূষিত করে ফেলে, মাটি বিষাক্ত করে দেয়। শুধু তাই নয়, নিজেদের স্বার্থে একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধ বাধায়।"


পাখিটি হতাশ হয়ে বলল, "এটা তো খুবই দুঃখজনক! কিন্তু মানুষদের কি ভালো করা যায় না?"


গাছটা বলল, "তাদের ভালো করা যায়, তবে তাদের নিজেদের মধ্য থেকেই পরিবর্তন আসতে হবে। বাইরে থেকে কেউ কিছু করতে পারবে না। তারা যতদিন প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে, ততদিন তারা ভালো থাকবে। কিন্তু যতই নিজেদের স্বার্থে প্রকৃতিকে আঘাত করবে, ততই প্রকৃতি তাদের থেকে প্রতিশোধ নেবে।"


পাখিটি গাছ দাদুর কথা শুনে চিন্তিত হলো। সে বুঝতে পারল, পৃথিবীকে রক্ষা করতে হলে সবাইকে মিলেমিশে থাকতে হবে, ভালোবাসতে হবে প্রকৃতিকে। পাখিটি গাছ দাদুর কাছে কৃতজ্ঞ হয়ে বলল, "ধন্যবাদ, গাছ দাদু! আমি চেষ্টা করব যেন মানুষদের কাছে তোমার এই কথা পৌঁছায়।"


গাছটি শান্ত স্বরে বলল, "পাখি বেটা, কথা পৌঁছাবে কিনা জানি না, কিন্তু প্রার্থনা কর যেন মানুষ একদিন সত্যিই বুঝতে পারে যে প্রকৃতি তাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু।"